হাটবার; এটা সপ্তাহের সাতটা বারের থেকে অতিরিক্ত অষ্টম কোন বার না। আজ বৃহস্পতিবার এবং প্রতি বৃহস্পতিবার করে হাট বসে বলেই গ্রামের মানুষ নাম দেয় হাটবার। আজ হাটবার তাই ভাতের দোকান কি চা-মিষ্টির দোকান সবখানে টেবিল কানায় কানায় ভরা তবুও একটা চা-মিষ্টির দোকানে ঢুকলাম। মেছিয়ার বলে দিল – শেষের মাথায় একটা টেবিল খালি আছে। ঐ টেবিলে একজন লোক সাথে দুই মেয়ে আর এক ছেলেকে নিয়ে মিষ্টির শিরায় ডুবিয়ে পুড়ি খাচ্ছে। মেছিয়ার এসে চেচিয়ে উঠল – ছয়জনের টেবিল চারজনে দখল নিচে দ্যাখোম; ঐ চ্যাংড়া ওট … 

এক ঝারিতে বাচ্চা ছেলেটা তরিঘড়ি করে উঠতে গিয়ে পিরিচে নেয়া মিষ্টির শিরা পড়ে গেল, যার খানিকটা গিয়ে পড়ল ছোট মেয়েটার জামায়। এবং মেয়েটা সময় খরচ না করে জামার অংশটা চুষতে লাগল; পাশেই তার বড় বোন, খুব বিরক্তি ও লজ্জার সাথে জামাটা টেনে ঠিক করে দিল। আমি বললাম – থাক,  আমি বসতেছি।    

খানিক পরেই মেছিয়ার ফিরে এসে জিজ্ঞেস করল- সার খাবেন কি কন? 

কি কি আছে?

সাদামিষ্টি, কালোজাম, সাদা পুরি, সিঙ্গারা, চা, নিমকি, সন্দেশ …… কোনটা?

ভাত-তরকারি নাই?   

না, ভাত বেচি না; সিঙ্গারা, মিষ্টি দেই?

পাশে বসা লোকটা কথা টেনে নিয়ে আমাকে বোঝাতে লাগল – মিষ্টিই খান সার, খুব নামকরা মিষ্টি, বেহেস্তের রসোগোল্লা … হে হে হে … 

আব্বা, মিষ্টি……, ছেলেটার কথা মুখ থেকে বের হবার আগেই বাপের ধমক – ‘চুপ, জমিদারের বাচ্চা হচিস? এ ভাই অক এ্যানা মিষ্টির ঝোল দে তো’।

ছোট মেয়েটা জিজ্ঞেস করল – আব্বা, সাদা পুরি কি?

পুরির ভিতরে ডাইল না দিলে সাদা পুরি কয়।

আব্বা; ডাইল দিলে কি পুরি হলুদ হয়? আব্বা, মোরটা সাদা হয় নাই ক্যা?   

চুপ, খাওয়ার টাইম কতা কলে গুনা হয়।

আমি মিষ্টি আর সাদা পুরি চাইলাম সাথে আরো চারটা মিষ্টি দিতে বললাম তাদের। লোকটা বারবার লাগবে না বুঝালেন এবং বিভিন্ন অভিব্যাক্তির দ্বারা ধন্যবাদ প্রকাশ করে গেলেন, কোন “ধন্যবাদ” শব্দের দ্বারা নয়। আসলে গ্রাম-বাংলায় কোন কালেই সাধারণ মানুষগুলা শহুরে কায়দায় “ধন্যবাদ” শব্দের ব্যাবহার করে না, যা Thank You বলার ইংরেজী রীতি থেকে আগত কি না জানি না তবে অনুপ্রাণিত। মনে রাখবেন, শহুরে “ধন্যবাদ”-এর চেয়ে অনেক খাটি কৃতজ্ঞতাবোধ থাকে গ্রামের মানুষের অন্তরে।             

খাওয়ার ফাকে আলাপ পরিচয় হয়। সার, আমি মেজিক দেখাই, মোহাম্মদ আছির মিয়াঁ নাম, খাওয়ার পর তোমাক একটা কঠিন ম্যাজিক দেখামো। আমার বড় মেয়ে নুরনেছা, মোর সাথেই গান করে, ওর গানের গলা মিষ্টি। ছোটটার ঝোক থালেও ওর মায়ের জন্যে শেকে নাই, নাম আফিয়া। ঐ তোর নাম ক … “টুলু”। এক থাপ্পড় খাবু, মোহাম্মদ কোটে? ছেলেটা কষ্টে আবার বললো  “মোহামম টুলু মিয়া”, বুঝলাম ও প্রতিবন্ধি। আছির মিয়াঁ সাধু ভাষায় কথা বলার দ্বারা নিজের দীনতাকে হয়ত ঢাকবার চেষ্টা করছিলেন কিন্ত ভুল চেষ্টার লজ্জাও তাকে ছাড় দিচ্ছিল না।                

আছির মিয়াঁ নিজ মনে হাট সম্পর্কে বর্ণনা দিচ্ছেন – তারগঞ্জের হাট ম্যালা নাম করা হাট; আশেপাশের দশ-বিষ গ্রামের একটা হাটও এর এক কানির সমান নয়।  উত্তরকানি দিয়া ঢুকলে দক্ষিণের কানি খুজি পাওয়া কটিন কাম। বছরে দুইবার মেলা বসে – বৈশাখ মাসের শুরুত পাচ দিন আর অগ্রান মাসের শ্যাষত তিন দিন। আগে দুর্গাপুজ্যার মেলাও লাগচে, এখন বসে না।  

কারণ কি?

হাটের কমিটি চান্দা চাইচে, পুজ্যার কমিটি রাজি হয় নাই। কিন্তু, পরে মসজিদ কমিটির ঘাড়ত দোষ থুইয়া পুজ্যা বন্দ করচে।   

সার তোমার বাড়ি কোটে? তারাগঞ্জত তো আগে দেখি নাই।

রংপুর থেকে আসছি, হাট করতে।  

ওহ, করেন কি? চাকরী না ব্যাপসা?

চাকরী, বাংলাদেশ টেলিভিশন।

টেলিভিশনের চাকরী? আল্লাহ… কসম?  আমি হাসতে থাকি। 

সার, কিনবেন কি?

হাস, কবুতর এইসব, আর কি পাই দেখি।

আমি বিদায় নিয়ে হাটের ভিতর ঢুকলাম। সত্যিই এক বিশাল হাট, কাচা বাজার এর সাথে মাছের বড় আড়ত, গোসতের হাটি, শুটকির আড়ত, পানের আড়ত, দুধ হাটি, গরু হাটি, হাস, মুরগি, কবুতরের অভাব নাই । আর দামে, যেখানে রংপুরে গোসতের কেজি ১২০ টাকা তা এখানে ৮০ টাকা আর ইলিশ মাছের কেজি ১০০ টাকা।        

সগলায় অর মুকত জ্যুতা মারো… বাপ হয়া বেটিক দিয়া হাটত ব্যাপসা জুরচে

কিন্তু হাট জমলো বিকেল বেলা আর রংপুরে ফেরার শেষ বাস পাচটার দিকে। আমি সব কেনার পর হাট থেকে বের হবো কিন্তু রাস্তা ভুলে গেলাম, কোনমতেই খুজে পাই না। এক গলি থেকে আরেক গলি, এক আড়ত থেকে আরেক আড়ত যাই কিন্তু সব একই রকম লাগে। আমার এক হাতে তিনজোড়া পাতিহাসা, আরেকহাতে দশজোড়া কবুতর। ততক্ষণে ঘড়িতে বাজে ছয়টা প্রায় আর আমার কপালে তখন বারোটা বেজে গেছে …   

ঘুরতে ঘুরতে হাটের এক কানিতে বট গাছতলায় আছির মিয়াঁকে দেখলাম মানুষের জটলার ভিতরে। আছির মিয়াঁর নয় বছরের মেয়ে নুরজাহান গান গাইছে, বাপ হারমোনিয়াম বাজানোর ফাকে ফাকে ম্যাজিক দেখাচ্ছে, সাত বছরের টুলু আর পাচ বছরের আফিয়া বাপের কাজের দুই সহযোগী। ভীড়ের পিছনে আমাকে দেখা মাত্রই আছির মিয়াঁ হাক ছেড়ে উঠে এলো – ও সার, এদিক আসো… অংপুরের বাস তো ছাড়ি দিচে, আইতের বেলা কোটে উটবেন? 

আমি আমতা আমতা করছি। আছির মিয়াঁ আমার হাত টেনে ভীড়ের মাঝে নিয়ে যেতে যেতে বললেন –আতট্যা কনোমতে হামার বাড়ীত কষ্ট করি থাকেন আলা। আমাকে এনে মাটিতে বিছানো চাদরে বসালেন। এবং দাড়িয়ে জনতার সাথে আমাকে পরিচয় করালেন- এই সার টেলিভিশনের মানুষ, অংপুর থাকি হামার হাট করবের আচ্চে। উপস্থিত জনতা করতালি দিয়ে আমাকে স্বাগত জানাল। আমার এক জীবনে এত সম্মান আগে পাই নাই।    

খানিক যেতে না যেতেই আকাশ কালো হোয়ে এলো, প্রকাণ্ড শব্দে কালো মেঘ তেড়ে ছিঁড়ে আসা শুরু করল। গোলাকার আসরে মানুষের জটলাও ভাঙ্গা শুরু করল। আছির মিয়া তারা দিয়ে ছেলে-মেয়েদের টাকা তুলতে পাঠালেন আর নিজে চাদর, হারমোনিয়াম আর আমাকে নিয়ে একটা পাকা ঘড়ের বারান্দায় দাড়ালেন।

ইতোমধ্যে ঘূর্ণি বাতাস ধূলায় ঢেকে দিয়েছে পুরো হাট আর বড় বড় ফোটার বৃষ্টিও শুরু। টুলু আর আফিয়া দৌড়াতে দৌড়াতে বাপের কাছে এলো। টুলু তড়িঘড়ি করে কি যেন বলতে গিয়ে তোতলাতে লাগলো আর উত্তেজনায় টাকা মোচড়াচ্ছিল। আছির মিয়াঁ গালে কোষে চর হাকালেন – টাকা খান ছিরিস ক্যা হারামজাদা? – এ নুরনেছা কোটে? টুলু ভ্যা ভ্যা করে কাঁদা শুরু করলে আফিয়া ভয়ে জড়সড় হয়ে ভাইয়ের পিছনে নিজেকে আড়াল করল। 

আছির মিয়াঁ মেয়েকে খোজার চেষ্টা নেয় কিন্তু বৃষ্টির সাথে ঝড় তখন দানবের রুপ নিয়েছে; টিনের চাল, পানের বুরুজ, গাছের ডাল ভেঙ্গে উরে নিয়ে যায়। সবাই ধরে বসালেন এই সান্তনা দিয়ে যে, কারো দোকানে জায়গা নিয়েছে হয়ত আর ঝড়ের পরে তোর মেয়ে ফিরে আসবে।  

ঝড় থামল বটে কিন্তু নুরনেছার দেখা মিলল না। এমনিতেই ঝড় আসা মানে আছির মিয়াঁর মাথায় আকাশ ভেঙে পরা; এ শুধু ম্যাজিকের আসর ভাঙা নয় সাথে আয়রোজগারও ভেঙেছে। ‘হামার বড় বেটিকোনাক দেকচেন নাকি বাহে?’ – ডাক ছেড়ে ছেড়ে আছির মিয়াঁ এক দোকান থেকে আরেক দোকানে ছোটে। খানিক আগে যে হাট অস্থির জনসমুদ্র ছিল এখন তা শান্ত কাদার পাহাড়। আমি টুলু আর আফিয়ার সাথে হারমোনিয়াম সহ ম্যাজিকের যন্ত্রপাতি পাহারা দিচ্ছিলাম এবং ক্লান্তির ভারে একটা বস্তার উপড়ে বসে ঝিমাচ্ছিলাম।     

হঠাৎ, একটা শোরগোল এদিকে আগাতে থাকল, ভীরের ভিতর থেকে আছির মিয়াঁর কান্নার আহাজারি কানে এলেও তাকে দেখতে পেলাম না। টুলু দৌড়ে ভীরের ভিতর ঢুকে গেলো এবং আফিয়া তাকে অনুসরন করল। ভীরটা কাছে এলো, ভ্যানগাড়ির উপর নুরনেছা, মেয়েটার শরীর গামছা দিয়ে ঢাকা আর তার জ্ঞান আছে বলে মনে হলো না। সবাই হাসপাতালে যাচ্ছিল আমিও তাদের সাথ নিলাম।  

এই মফস্বলে একটা হাসপাতাল থাকলেও চিকিৎসক অনেক দুষ্প্রাপ্য। সাত সজ্জার হাসপাতাল, বর্তমানে কোন আসন খালি নাই, রুগীরা হাসপাতালের বারান্দায় জায়গা পেয়েছে আর সেখানেই নার্স ও কম্পাউন্ডারের সমস্ত চিকিৎসা ব্যাবস্থা। নুরনেছা জায়গা পেয়েছে হাসপাতালের খোলা বারান্দায়। একজন আয়া এসে গায়ের উপর সাদা চাদর ফেলে লোকজনদের সরে যেতে বললেন আর নার্স স্যালাইন ও ইনজেকশন দিয়ে বলে গেলেন – ‘ডাক্তার স্যার আসলে যা করার করবে, আমরা এই রুগীর গায়ে হাত দিতে পারব না’। সাদা চাদর ভিজে উঠা রক্ত এখন স্পষ্ট।

হাসপাতালে ডাক্তার আর রুগীর সংখ্যা কম হলেও উৎসুক জনতার কমতি নাই; যুবক, বৃদ্ধ, শিশু ভীর করে অতি আগ্রহ নিয়ে এই চিকিৎসা শাস্ত্র আত্মস্থ করছে। এরই মাঝে কানা কানি কথাও শোনা যাচ্ছে টুলু নাকি দেখেছে, কে নুরনেছাকে টেনে নিয়ে গিয়েছিল।এই ঘটনার আবার নানান রংচঙে গল্প তৈরি হচ্ছে এবং কিছু লোকে তা কামুখ হয়ে উপভোগ করছে দলা করে।    

রাত প্রায় নয়টায় নুরনেছার জ্ঞান ফিরল। তার খানিক বাদেই পাচ, সাতজনের একটা দল এসেছে আছির মিয়াঁকে নিতে। হাট কমিটির চেয়ারম্যান, হাজী কফিল ব্যাপারী তাকে ডেকে পাঠিয়েছেন; কারন হাটে একটা সালিশ বসেছে। আছির মিয়াঁ আমার কাছে উঠে এলেন। সার তুমি এনা হাটো মোর সাতে, মোর ক্যাও নাই, কতা কবার বলও নাই।

হাটের ভিতর সালিশে উপস্থিত হওয়া মাত্রই কয়েকজন আছির মিয়াঁকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল- সগলায় অর মুকত জ্যুতা মারো… বাপ হয়া বেটিক দিয়া হাটত ব্যাপসা জুরচে! দুএকজন মারার জন্য উঠেও এলো, কফিল ব্যাপারী তাদের শান্ত করলেন। 

কফিল- শোন আছির, তুই তোর বেটিক দিয়া কামাই করি খাস, ভালো কতা কিন্তু তুই তোর বেটিক সামলে থুবু না হে? অ্যার পরে হাটের তিরিশ সীমানার ভেতর জানি ঐ ঢুকপ্যার না পায়, কয়া দিলুম।

আছির- ভাই মুই তোমার কাচে বিচার চাই, তোমরা ইনসাপ করো। মোর ছলট্যার এতবড় খতুয়া করলো তোমার ব্যাটায়, তার একটা বিচার করো।

কফিল- এ ওর টুটি চিপি ধর… হারামজাদা কয় কি?? অর অ্যাতো সাহস! কফিল হুঙ্কার দিয়ে উঠল আর সাথে সাথেই কয়েকজন এসে কিল ঘুসি থাপ্পড় দিলো।

সুযোগ পেয়ে একজন তেল দেয়ার উদ্দেশ্যে বলে উঠল- হাটত মেয়েছেলে দিয়া গান-বাজনা করাটা নাজায়েজ কাজ, এই কাম সহ্য করলেও গুনাহ হয়। আরেকজন বলল – আরে অই কি খালি মেজিক দেকায়? হাটের পরে বেটিক ব্যাচেয়া খায়। 

আছির- মুই থানাত যাম; মামলা করিম তোমার বাপ-ব্যাটার নামে।    

কফিল খানিক শান্ত গলায় বলল- শোন, তোর ব্যাটায় পাগলা, কি দেখতে কি দেখচে তার ঠিক নাই। হুদাহুদি মোর বাড়ির ইজ্জত নিয়া টান দিচে। আর মামলা করি তুই মোর সাতে কুলাবার পাবু হে? এখনও সময় আচে, মুক বন্দ কর আর তোর ব্যাটার মুকও বন্দ করবু, নাহলে সোগগুলার কাল্লা কাটি থুইয়া আসিম। দেখিম তুই কি করিস আর থানা-পুলিশ কোটে থাকি আসে?  কফিল তসবিহ করতে করতে বেড়িয়ে গেল। 

আছির মিয়াঁ আমার হাত চেপে ধরলেন। – সার তোমরা মোক বাচাও, তোমরা শিক্ষিত, টেলিভিশনত থাকেন তোমরা কিছু একটা করো…। সে আহাজারি করতে লাগলেন – মুই ওর মাওক কি বুজ দেম? মুই ছল কোটে পাইম আল্লা …

আমি চোখে পানি ধরে রাখতে পারলাম না। শুধু মনে মনে বললাম – দাদা আমারে মাফ করেন। আমি সামান্য পিয়নের চাকরী করি, এইখানে আসছি আমার স্যারের বউ-এর বাজার করতে, আমি এই গ্রামের লোকও না; তারউপর আমি হিন্দু। আমার কথা কে শুনবে?

একজন বুঝাইতে এলো- যা হইচে, চুপ করি থাক, থানা পুলিশ করি কাম নাই পাচে ছোট বেটা-বেটিকো হারাবু। মান ইজ্জত যা গেচে তাক থানা পুলিশ করি কি ফিরি পাবু?  আর থানা পুলিশ চলেই ওমার টাকাত।মাইনষে জানলে বেটিক কোটে থুবু আর কোটে বিয়া দিবু?

আরেকজন বলল – আরে জানার কি বাকি আচে বাহে? সারা গ্রাম তলতলা হইচে, আর ঐ যাইবে কোটে? অর নিজের জায়গা জমি আচে? থাকে পরের ভিট্যাত, তামরাও আলা খ্যাদে দিবে… মোর একটা বুদ্দি শোন, বেটি যেটা গেচে গেচে আরো একটা তো আল্লায় দিচে। মোর চেনা মানুষ আচে অংপুর এস্টেশনত তারায় আলা বডার পার করি থুইয়া আসপে।

মুই ওষুদ-পাতি নিয়া আসিম তোমরা যাও। আছির মিয়াঁ আমাকে অন্যদের সাথে হাসপাতাল যেতে বললেন।

আছির মিয়াঁ ভাত, মুরগির গোশত আর এক হাড়ি মিষ্টি নিয়ে হাসপাতালে ফিরলেন। এবং পরম আদরে তিন ছেলে মেয়েকে খাওয়ালেন। আমাকেও খাবার, পানি সাজিয়ে দিলেন। খাওয়া শেষে নুরনেছাকে এক শিশি কি যেন একটা ওষুধ খাওয়ালো। এর পর দ্রুত হাসপাতালের গেটের বাইরে চলে গেলো। বাইরে আছির মিয়াঁ ডুকরে কান্না করছে। কিছুক্ষন পরেই আয়ারা চিল্লাচিল্লি শুরু করলো –তারাতারি… রুগী বিষ খাইচে…