খুব ঘন অন্ধকারেও আমি নিজেকে দেখতে পাই।
চিবুকের ভাজ, বুকের ডান পাশের তিল,
কাশবনের মত চুল সব স্পষ্ট আমার চোখে।
কিন্ত ল্যাম্পপোস্টের নিচে নিয়ন আলোয় নিজেকে অচেনা লাগে;
গায়ের জামা, চামড়া, লোম সব অচেনা, এ আমার নিজের না।

দিনের ঝকঝকে আলোতেও আমি আমার দিকে তাকিয়েছি।
গায়ের উপর জাঙ্গিয়া, প্যান্ট, শার্ট, চশমা, সদা হাস্যল এক চেহারা
আমার তবে সে আমি না; ভদ্র মুখোশে ঠাসা অচেনা এক মুখ।

দরজার আড়ালে এলেই আমি গা স্পর্শ করি, আমার ঠোট, জিহ্বা লালায় চকচক করে।
হাতের রেখায় কচলাই সমস্ত রাগ, শিরায় শিরায় নাচে উদম উৎযাপন।
বন্যতা আমায় সিংহের মত হিংস্র করে, আমি শরীর চাই হরিণের মত
শিকারের নেশা আমাকে নির্ঘুম করে, অস্থির ক্ষুধার কাঁন্না বুঁদ হয়ে থাকে চোখে।
আমার ভিতরেও জন্মেছে এক ভিসুভিয়াসের জীবন্ত আগ্নেয়গিরি
আমি চাই রাগ নিঙরে দেবার মত খাঁদ, ক্ষোভে পোড়ানোর মত তৃণভূমি।

পুর্নিমার টানে সাগরে যখন জোয়ার উঠে, ক্ষিপ্র স্রোতে সে গোঙায় রাতে,
তীরে এসে ভেঙ্গে পরে কাচের টুকরোর মতন। আমিও তোমায় দেখতে পাই;
পাপ, তোমার নামে অনেক ঘৃণা, ভয় তবুও তো চুমু খাই নেশা ধরা নিউরনে।

বীভৎস ঝরের পরেও সকাল হয়, শুরু হয় বন্ধুত্ব, বিভেদ, দায়িত্ব;
হাটে হাটে নাটকের মঞ্চ বসে, মঞ্চের নাম স্বপ্ন, বেচে থাকার অবলম্বন।

দুপুরের শেষ সীমানায় এসে দাড়াই, নিঃশ্বাস ভার ভার লাগে,
মেঘের উপর ভাসা শালিকের খসে পড়া পালকের মত আলত হতে চায় মন।
আমি ক্লান্ত হতে চাই, বিন্দু বিন্দু শিশির যেই ঘাসের বুকে জমে
সেখানে নুয়ে পড়তে চাই আদোরে।


কলমে – ঈষদ

29 August, 2024